Domain and Hosting

ওয়েব হোস্টিং কি? হোস্টিং কত প্রকার – বিস্তারিত আলোচনা।

ওয়েব হোস্টিং কিঃ- আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে বেসিক কয়েকটি বিষয় জানার প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হলো ডোমেইন ও হোস্টিং কি? কেন প্রয়োজন। ইতিমধ্যে আমি ডোমেইন কি? এটি বিস্তারিত আর্টিকেল লেখেছি পড়ে আসুন যদি না জেনে থাকেন। আজকের আলোচনার বিষয় বস্তু হলো Web Hosting কি এবং হোস্টিং কত প্রকার এই পোস্ট আপনাকে অনেক উপকৃত করতে পারে একটি ওয়েবসাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে। বিস্তারিত পড়তে থাকুন আশা করি অনেক কাজে আসবে।

ওয়েব হোস্টিং কি? (What is web hosting)

Hosting meaning in bengali? – ওয়েব হোস্টিং হলো এক ধরনের সেবা যেটি দ্বারা একটি ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। কি বিষয়টা ক্লিয়ার হলো না তো তাই না? সমস্যা নেয় জিনিস আরো সহজ ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি। Web Hosting কি এটি সহজ ভাবে বুঝতে হলে আমাদের কে একটু পিছনের দিকে যেতে হবে। আমরা যখন কোন ওয়েব পেজ বা ওয়েবসাইট বানায় সেটি প্রাথমিক ভাবে কিন্তু আমাদের কম্পিউটারে থাকে তাই তো নাকি? আমাদের কম্পিউটারে সবার প্রয়োজন মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেমন html, css, javascript, backend language, database ইত্যাদি টেকনোলজি দিয়ে ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করে থাকি।

নোটঃ ওয়েব আর ইন্টারনেট এক জিনিস না(যদিও আমরা মনে করে ওয়েবসাইট মানেই ইন্টারনেট তা না ইন্টারনেট হলো এক বিশাল নেটওয়ার্ক আর এই নেটওয়ার্ক দ্বারা একটি ওয়েবসাইট পৃথিবীদের যেকোন কোণায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।)

অর্থাৎ কোডিং বা অন্য কোনভাবে নিজের কম্পিউটারে ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। আর এই ওয়েবসাইট গুলো কিসের মাধ্যমে তৈরি করে সেটি হলো বিভিন প্রোগ্রামিং ও মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে আর সেই গুলো ফাইল আকারে থাকে। খুব ভালো কথা সাইট তৈরি করলেন এখন যদি আমাদের ওয়েবসাইটটি কে অন্য মানুষের সাথে শেয়ার করতে কিন্তু তা কি পারবেন? না সেটি যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার কম্পিউটারে রয়েছে দেখাতে পারবেন না। যদি আপনার ডিজাইন ও ডেভলপমেন্ট করা সুন্দর ওয়েবসাইটটি দেখাতেই চান তাহলে বন্ধু-বান্ধবীকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসে দেখাতে হবে। 😂

ঠিক তখন দরকার পড়বে আপনার Web Hosting সার্ভিস বা সেবার। একটি বাড়ি তৈরি করতে গেলে প্রথমে যেমন জায়গা প্রয়োজন হয় এবং তারপর সেখানে বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বাড়ি ব্যবহার জন্য উপযোগী হয়ে যায়। ঠিক তেমনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে জায়গার প্রয়োজন যাতে আপনার যেসব ফাইল রয়েছেন যেমনঃ html, css, javascript, database, php, ই্ত্যাদি রাখতে পারেন। শুধু রাখলেই হবে একটি সঠিক জায়গাতে রাখতে হবে। কি সেই সঠিক জায়গা? এটি আপনার সাধারণ কম্পিউটার মতোই একটি কম্পিউটার কিন্তু সাধারণ না।

এই কম্পিউটারটি বলা হয়ে থাকে সার্ভার কম্পিউটার বা সার্ভার। তাহলে সার্ভার কি? সার্ভার এমন এক ধরনের বিশেষ কম্পিউটার যেটি হাই কনফিগারেশনের এবং দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবার সাথে যুক্ত। অর্থাৎ সার্ভার হলো এমন একটি শক্তিশালী কম্পিউটার যে অন্য কম্পিউটার বা অন্য কোন ডিভাইস থেকে ডাটা দেখার রিকুয়েষ্ট করলে সেই ডাটা আমাদেরক প্রেরণ করে।

এই সার্ভার আর কিছুই একটি শক্তিশালী কম্পিউটার এবং কিছু বিশেষ সফটওয়্যার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম। আমাদের কম্পিউটারে যেমন RAM, Processor, Storage Device ইত্যাদি থাকে ঠিক ঐ সার্ভার এই জিনিস গুলো থাকে শুধু পার্থক্য হচ্ছে তাদের হার্ডওয়্যার গুলো অনেক ক্ষমতা সম্পন্ন ও তারা অনেক দ্রুত গতির ইন্টানেট সেবার সাথে সংযুক্ত। আর তাদের ঐ কম্পিউটার যেটাকে সার্ভার কম্পিউটার আবার কখনো ওয়েব হোস্টিং সার্ভারও বলা হয়ে থাকে তাতে সার্ভার সফটওয়্যার দেয়া থাকে এই হলো পার্থক্য।

আমরা চাইলে আমাদের কম্পিউটার যেটাটি কে লোকাল কম্পিউটার বলা হয়ে থাকে। কারণ এটি লোকালি আমরা শুধু ব্যবহার করতে পারি শুধু আপনি দেখতে পারবেন অন্য কাউকে সাইট দেখাতে পারবেন না। তো আমরা চাইলে আমাদের লোকাল কম্পিউটার কে সার্ভার কম্পিউটার বানাতে পারি কিন্তু বাধা হলো এই ওয়েব সার্ভার বানাতে যে পরিমাণের রিসোর্স লাগবে সেইগুলো আমরা দিতে পারবো না। কারণ একটি সার্ভার কম্পিউটার ২৪ ঘন্টা চালু হাই স্পিড ইন্টারনেটের সাথে। মাসের পর মাস বছরের পর বছর নির্বিচ্ছিন্ন ভাবে সংযোগ দেওয়া থাকে।

কিন্তু আমরা যখন এই ওয়েব সার্ভার তৈরি করতে যাবো তখন আমরা অনেকেই শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ, হাই স্পিড ইন্টারনেট, হাই কনফিগারেশনের হার্ডওয়্যার ইত্যাদি যোগার করতে পারবো না। এই জন্য আমাদেরকে এই ওয়েব হোস্টিং সেবা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে ক্রয় করে নিতে হয়। ঠিক যেমন যাদের নিজস্ব বাড়ি ঘর নেয় তারা অন্যের তৈরি করা বাড়িঘর বাড়া নিয়ে থাকে যেখানে বিদ্যুৎ সহ জীবন যাপন করতে যা লাগে সব আছে। হোস্টিং এর ক্ষেত্রে জিনিসটা একই আমরা এতো হাই কনফিগারেশনের কম্পিউটার ও ইন্টারনেট পাবো না বিধায় কোন এক কোম্পানির কাছে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার মতো সার্ভার ভাড়া করে নিতে হবে।

আশা করি, এতটুকু থেকে আপনার ওয়েব হোস্টিং কি(What is web hosting) এইটুকু সহজেই বুঝতে পেরেছেন। আমি একদম সহজে বোঝানোর জন্য কঠিন টার্ম ব্যবহার করি নি তাই হয়তো অনেকের কাছে পড়তে কষ্ট হতে পারে।  চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক হোস্টিং এর প্রকারভেদ।

হোস্টিং প্যাকেজ

ওয়েব হোস্টিং সেবা মূলত ধারণ ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে সেল করা হয়ে থাকে। আমরা জানি, ওয়েবসাইট বিভিন্ন ফাইলের দ্বারা তৈরি ঐ ফাইল গুলো রাখার যে জায়গা লাগে সেটাই হোস্টিং প্রোভাইডার দিয়ে থাকে। তো হোস্টিং কোম্পানি প্যাকেজ গুলো তৈরি করে আপনি কতটুকু জায়গা জুড়ে আপনার ওয়েবসাইট বা ওয়েবসাইটের ফাইল গুলো রাখতে পারবেন। সাধারণত প্যাকেজ গুলো ১জিবি থেকে শুরু হয়ে থাকে কোম্পানি ভেদে আলাদাও হতে পারে। ১জিবি ডিস্ক স্পেস মানে আপনি ১জিবি পর্যন্ত ফাইল স্টোর করে রাখতে পারবেন। এছাড়াও কতটি ডোমেইন এড করতে পারবেন, কতটি ডাটাবেস তৈরি করতে পারবেন, কতটি ইমেইল তৈরি করতে পারবেন, আরো অন্যান্য কি সেবা পাবেন সেই গুলোর উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা প্যাকেজ করে বিক্রি করা হয়ে থাকে।

হোস্টিং কত প্রকার তা জানার আগে এই বিষয়টি জানানো জরুরি ছিল।

হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি?

হোস্টিং বাজারে Web Hosting সেবা ক্রয় করতে গেলে আমরা বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেজ লিস্টে Shared Hosting, Dedicated Hosting, VPS Hosting, Managed Hosting ইত্যাদি শব্দ দেখতে পাই এই গুলোর অর্থ কি এবং কোন প্যাকেজ কি কাজে ব্যবহার করা হয় এইখান থেকে জেনে নিবো।

হোস্টিং দুনিয়ায় সাধারণত এই কয়েক ধরনের হোস্টিং সার্ভার দেখা যায় তাই এই গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ

Type of web hosting services:

  • Shared Hosting
  • Dedicated Hosting
  • VPS Hosting
  • Cloud Hosting
  • Managed WordPress Hosting

বিভিন্ন ধরনের ওয়েব হোস্টিং এর মধ্য পার্থক্য (What are the different types of web hosting)

শেয়ারড হোস্টিং, ডেডিকেটেড হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং,  ক্লাউড হোস্টিং, ম্যানেজ ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং গুলোর মধ্যে পার্থক্য এবং সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ্য করা হলোঃ

শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting)

what is shared hosting

যে হোস্টিং সার্ভারে একাধিক ওয়েবসাইট হোস্ট করা হয়ে থাকে সেইসব হোস্টিং সার্ভারকে শেয়ার্ড হোস্টিং(Shared Hosting) সার্ভার বলা হয়ে থাকে। Shared Hosting Server এ অনেক গুলো ওয়েবসাইট রাখা বা হোস্ট করা হয়ে তাকে আর এই সাইট গুলো ঐ সার্ভার রিসোর্স ব্যবহার করেই চলে। বিষয়টি এমন ধরুন, একটি হোস্টিং সার্ভার যার স্টোরেজ হল ১০০জিবি ও অন্যান্য আনুসংঙ্গিক র‍্যাম, প্রসেসর ইত্যাদি আছে। এখন এই সার্ভার থেকে ২জিবি করে করে ৫০ জন ব্যবহারকারী করে দিলেন এবং তারা সবাই একটি করে ওয়েবসাইট সার্ভারে রাখলো। অর্থাৎ একটি সার্ভার রিসোর্স কয়েক জনের সাথে শেয়ার করে নেওয়া হচ্ছে। এখন যদি বলা হয়ে শেয়ার্ড হোস্টিং কি? তাহলে আমরা অবশ্যই বলতে পারি, যে সার্ভারে একাধিক ওয়েবসাইট রাখা হয় এবং ঐ একই রিসোর্স ব্যবহার করে থাকে তাকে Shared Hosting বলে

বিষয়টি আরো ভালোভাবে বোঝানোর জন্য একটি বাস্তবসম্মত উদাহরণ দেয়। ধরুন আপনি থাকার জন্য একটি বাসা খুঁজচ্ছেন কিন্তু যে বাসা গুলো থাকার জন্য পাচ্ছেন তার ভাড়া অনেক বেশি যা আপনার দেওয়ার মতো সামর্থ্য বর্তমানে নেয়। এই রকম শুধু আপনি না আরো অনেকেই আছে যারা টাকার অভাবে ভালো বাসা বাড়ি ভাড়া নিতে পারছে না। তখন আপনারা সবাই একত্রে হয়ে একটি বাসা বাড়ি পুরো ভাড়া নিলেন এবং ঐ বাড়িতে সবাই মিলে থাকা শুরু করলেন। যেহেতু বাড়িতে আপনারা সবাই আছেন তাই যে বাথরুম আছে সবাই ব্যবহার করলেন, যে রান্নাঘর আছে সেই গুলো সবাই মিলেমিশে ব্যবহার করলেন। এতে করে আপনাদের খরচ কমে গেল এবং থাকার জন্য জায়গা পেয়ে গেলেন।

ঠিক শেয়ার্ড হোস্টিং ও এমন, একটি সার্ভারে একাধিক লোকজন তাদের ওয়েবসাইট হোস্ট করে থাকে। হোস্টিং জগতে শেয়ার্ড হোস্টিং অনেক জনপ্রিয়। কারণ হচ্ছে শেয়ার্ড হোস্টিং এর দাম অন্যান্য হোস্টিংয়ের তুলনায় কম। একটি নতুন ওয়েবসাইট শুরু করার জন্য পারফেক্ট হোস্টিং বলে গণ্য করা হয়। একটি বাসা বাড়িতে একাধিক লোকজন থাকা যেমন সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনি শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করার সুবিধা ও অসুবিধাও রয়েছে।

শেয়ার্ড হোস্টিং এর সুবিধা

  • স্বল্প মূল্যে Shared Hosting পাওয়া যায়।
  • বাংলাদেশী টাকায় ১০০+ টাকা থেকে শুরু করে শেয়ার্ড হোস্টিং প্যাকেজ গুলো পাওয়া যায়। কোম্পানি ভেদে দাম আলাদা হতে পারে।
  • নতুন একটি ওয়েবসাইট শুরু করার জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

শেয়ার্ড হোস্টিং এর অসুবিধা

  • একই সার্ভার একাধিক ওয়েবসাইট থাকে বলে অন্য হোস্টিং তুলনায় ধীর গতির হয়ে থাকে।
  • Shared Hosting থাকা একাধিক ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি ওয়েবসাইটে ভিজিটর বেশি হয়ে গেলে অন্য ওয়েবসাইটে প্রভাব ফেলে।
  • অনেক সময় শেয়ার্ড হোস্টিং প্যাকেজে বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা থাকে।

কখন শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করবেন?

আপনি যদি কোন অর্গানাইজেশনের জন্য সাইট না তৈরি করে থাকেন যেটি হুট করে বা শুরুতেই বেশি ভিজিটর আসার সম্ভাবনা নেয় সেসব সাইটের জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং নির্বাচন করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার সাইট যদি একটি ব্লগ সাইট হয়ে থাকে বা অন্য কোন সাইট যেখানে শুরুতে অনেক ভিজিটর আসার সম্ভাবনা নেয় তার জন্য আপনি Shared Hosting ব্যবহার করবেন। যখন আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ভিজিটর আসা শুরু করবে তখন অন্য সার্ভারে মাইগ্রেট করলেই হয়ে যাবে। কিন্তু একটি নতুন ওয়েবসাইটের জন্য অনেক দাম দিয়ে ডেডিকেডেড বা অন্য কোন হোস্টিং কেনার প্রয়োজন নেয়।

ডেডিকেটেড হোস্টিং (Dedicated Hosting)

ডেডিকেটেড হোস্টিং ঠিক শেয়ার্ড হোস্টিং এর একদম বিপরীত হোস্টিং সার্ভিস। যেখানে শেয়ার্ড হোস্টিং  সার্ভার অনেক গুলা ওয়েবসাইট হোস্টিং করা থাকে অর্থাৎ অনেক ব্যবহার করে। এই দিকে ডেডিকেটড হোস্টিং সার্ভার শুধু আপনার জন্য নির্ধারিত সার্ভার যেখানে আর ইউজার থাকবে না। ঐ সার্ভার সমস্ত রিসোর্স শুধু আপনি ব্যবহার করবেন এবং আপনার যত ওয়েবাইট রয়েছে এই সার্ভারে আপনি রাখতে পারেন অথবা একটি ডেডিকেটেড সার্ভারে একটি ওয়েবসাইট রাখতে পারেন।

ডেডিকেটেড হোস্টিং সার্ভার অন্যান্য হোস্টিং সার্ভার থেকে অনেক ফাস্ট হয়ে থাকে সেই সাথে সিকিউরিটি বেশি। ডেডিকেটেড সার্ভারের দাম অনেক হাই যা একটি সাধারণ মানুষের পক্ষে কিনে ব্যবহার করা সম্ভব না। সাধারণত Dedicated Hosting Server সেই সব প্রতিষ্ঠান বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে যাদের প্রচুর ভিজিটর থাকে। যেহেতু প্রচুর ভিজিটর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই সাইট যেন ডাউন না হয় তাই তারা ডেডিকেটেড হোস্টিং সার্ভার ব্যবহার করে থাকে।

ডেডিকেটেড হোস্টিং এর সুবিধা

  • একটি সার্ভার এক জনের জন্য নির্ধারত থাকায় এর পার্ফোমেন্স অন্যান্য সার্ভারের চেয়ে কয়েক গুণ ভালো।
  • এই সার্ভারে ওয়েবসাইট হোস্ট করলে সাইট অনেক দ্রুত লোড হবে।
  • অনেক বেশি ট্রাফিক হ্যান্ডেল করতে পারবে।
  • ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম হয়ে থাকে।

ডেডিকেটেড হোস্টিং এর অসুবিধা

  • ডেডিকেটেড সার্ভারের দাম প্রচু হয়ে থাকে।
  • ডেডিকেটেড সার্ভার ম্যানেজ করার জন্য দক্ষ লোকবল না থাকলে সমস্যা হতে পারে।

ভিপিএস হোস্টিং (VPS Hosting)

VPS পূর্ণরুপ হলো Virtual Private Server. ভিপিএস বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার হলো এমন এক ধরনের হোস্টিং সেবা যেখানে আপনি আপনার প্রয়োজন মতো একটি সার্ভার কনফিগার করতে পারবেন। মূলত যেসব ভিপিএস হোস্টিং সার্ভিস দাতা গুলো রয়েছে তারা কাস্টমারদের কে নিজের মতো করে হোস্টিং সার্ভার তৈরি করার সুবিধা দিয়ে থাকে। ভিপিএস মানে হলো আপনি একটি ভার্চুয়াল সার্ভার অর্থাৎ ভার্চুয়াল একটি সার্ভার মেশিন তৈরি করবেন যেটি শুধু আপনি ব্যবহার করবেন ঐ হোস্টিং প্রোভাইডারের অন্য কোন ইউজার এটি ব্যবহার করবে না।

VPS হোস্টিং ব্যবহার করলে ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত লোড হয়ে থাকে। ভার্চুয়াল হোস্টিং সার্ভার কিছুটা ডেডিকেটেড হোস্টিং সার্ভারের মতোই। মূলত ভিপিএস হোস্টিং সার্ভার একটি বড় ধরনের সার্ভার যেটাকে টেকনোলজির মাধ্যমে একাধিক ভাগে ভাগ করে একটি ভার্চুয়াল সার্ভারে পরিণিত করে থাকে। এটি একটি বাড়ি মধ্যে অনেক গুলো প্রাইভেট রুম থাকার মতো। এইখানে বাড়িকে একটি বড় সার্ভার এবং রুমকে প্রাইভেট হোস্টিং সার্ভার হিসাবে বিবেচনা করতে পারেন।

ভিপিএস হোস্টিং এর সুবিধা

  • ভিপিএস হোস্টিং যেহেতু একজন ব্যক্তি একাই ব্যবহার করে থাকে সেই জন্য অনেক সুরক্ষিত থাকে।
  • ভিপিএস হোস্টিং সার্ভার ব্যবহার করে আপনার ইচ্ছা মতো ওয়েব হোস্টিং কন্ট্রোল সফটওয়্যার ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারেন।
  • ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত লোডিং হবে।
  • ওয়েবসাইটের প্রচুর ট্রাফিক হ্যান্ডেল করার ক্ষমতা থাকে।

ভিপিএস হোস্টিং এর অসুবিধা

VPS Hosting এর তেমন কোন অসুবিধা নেয় একটি অসুবিধা হলো একজন নতুন ব্লগারের জন্য ভিপিএস হোস্টিং কেনা অনেক এক্সপেন্সিভ হয়ে থাকে।

ভিপিএস হোস্টিং কখন ব্যবহার করবেন?

আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটরের পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে আপনি ঐ সময় শেয়ার্ড হোস্টিং সার্ভিসে থাকলে VPS হোস্টিং কিনতে পারেন। সেই সাথে ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড বৃদ্ধিত করতে চাইলে ভিপিএস হোস্টিং সেবা ব্যবহার করতে পারেন।

ক্লাউড হোস্টিং (Cloud Hosting)

ক্লাউড হোস্টিং অন্যান্য হোস্টিং সার্ভিসের থেকে অনেকটা ভিন্নধর্মী হয়ে থাকে। অন্য সব হোস্টিং সার্ভারে ওয়েবসাইটের ডাটা তাদের একটি নির্দিষ্ট সার্ভারে থাকে এবং যখন ভিজিটর সাইট ভিজিট করার চেষ্টা করে তখন সেই সার্ভার থেকে ওয়েবসাইটটি ব্রাউজার দেখিয়ে দিয়ে থাকে। ফলে ক্লায়েন্ট কম্পিউটার থেকে হোস্টিং সার্ভারের দূরত্ব বেশি হয়ে থাকলে সাইট লোডিং হওয়ার সময়কালও বেড়ে যায়।

অপর দিকে ক্লাউড হোস্টিং সার্ভারে ওয়েবসাইটের ডাটা গুলো একটি সার্ভারে না রেখে একাধিক সার্ভারে রাখা হয়ে থাকে। এর ফলে কোন কারণে যদি একটি সার্ভার অচল হয়ে পড়ে তখন ব্রাউজার অন্য সার্ভার থেকে ডাটা গুলো দেখিয়ে ওয়েবসাইটে কে সচল রাখে। ক্লাউড হোস্টিং এ সার্ভিসে তাদের সার্ভার গুলো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বলে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকেই কেউ ওয়েবসাইট ভিজিট করার চেষ্টা করলে তখন ঐ ভিজিটরের কাছে থাকে সার্ভার থেকে ওয়েবসাইটকে দেখিয়ে দেয়।

যার ফলে ওয়েবসাইট অন্যান্য হোস্টিং এর তুলনায় অনেক দ্রুত লোড হতে সক্ষমতা রাখে। এইভাবে যদি কোন সময় একটি সার্ভারে ওয়েবসাইটের  ট্রাফিকের পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে অতিরিক্ত ট্রাফিক গুলো অন্য সার্ভারে ট্রান্সফার করে দেয়। এই জন্য ক্লাউড হোস্টিং এ হোস্ট থাকা সাইট গুলো ডাউন হওয়ার সম্ভবনা অনেকটা কম।

ক্লাউড হোস্টিং এর সুবিধা

  • এই ধরনের হোস্টিং সেবাই ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
  • প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক হ্যান্ডেল করতে পারে।
  • ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হয়ে থাকে।

ক্লাউড হোস্টিং এর অসুবিধাঃ

  • Cloud Hosting এর সার্ভিসের মূল্য অন্যান্য হোস্টিং সার্ভারের থেকে বেশি হয়ে থাকে।
  • রুট অ্যাক্সেস পাওয়া প্রোভাইড করে না।

ক্লাউড হোস্টিং কখন ব্যবহার করবেন?

আপনার ওয়েবসাইটে যদি ওয়ার্ড ওয়াইড হয়ে থাকে এবং ভিজিটর প্রচুর সেই সাথে দ্রুত লোডিং স্পিড চাচ্ছেন তখন আপনি ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন।

ম্যানেজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং (Managed WordPress Hosting)

যারা ওয়ার্ডপ্রেস CMS উপর ভিত্তি করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাদের জন্য বিশেষ একটি হোস্টিং সার্ভিস হলো Managed WordPress Hosting. যে হোস্টিং সার্ভিসে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি, লোডিং স্পিড ও অন্যান্য পার্ফোমেন্স ও Maintenance হোস্টিং প্রোভাইডারাই করে থাকে সেসব সার্ভিসকে Managed WordPress Hosting বলে।

ম্যানেজ হোস্টিং বলার কারণ হলো ওয়েবসাইট ভালো রাখার জন্য যেসব বিষয় থাকে ঐ গুলো তারা নিজেরাই করবে এইজন্য ম্যানেজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং বলা হয়ে থাকে। কোডিং দক্ষতা ছাড়া ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে অনেক ভালো মানের ওয়েবসাইট বানানো যায়। যার কারণে ওয়ার্ডপ্রেস অনেক জনপ্রিয় একটি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এই জনপ্রিয়তার জন্য হোস্টিং প্রোভাইডাররা শুধু ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য স্পেশাল সার্ভার তৈরি করে রেখেছে।

আর এই সব সার্ভারের Maintenance এর ব্যাপার গুলো তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মী দ্বারা করা হয়ে থাকে। এই ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং সার্ভারে রাখা সাইট গুলো সুপার ফাস্ট হয়ে থাকে।

ম্যানেজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং এর সুবিধা

  • ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানানোর জন্য সেরা হোস্টিং সার্ভার।
  • সুপার ফাস্ট ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।
  • সিকিউরিটি অনেক বেশি।
  • অনেক বেশি ট্রাফিক হ্যান্ডেল করার ক্ষমতা রাখে অন্যান্য হোস্টিং এর তুলনায়।

ম্যানেজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং এর অসুবিধা

  • ওয়ার্ডপ্রেস ছাড়া অন্য কোন ধরনের ওয়েবসাইট হোস্ট করতে পারবেন না।
  • অনেক কিছু লিমিটেড করে দেওয়া যা অন্যান্য হোস্টিং সার্ভিসে পাওয়া যায় ঐ গুলোর সব এইখানে পাবেন না।

আমি কোন ধরনের হোস্টিং সেবা কিনবো?

এই ব্লগটি পড়ে ইতিমধ্যে আমরা জেনে গেছি ওয়েব হোস্টিং কি? হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি। এখন অনেকের মনে আসতে পারে যে আমি কোন হোস্টিং প্যাকেজটি কিনবো? সোজা কথায়, আপনি যদি নতুন একটি ওয়েবসাইট শুরু চান তাহলে অবশ্যই ভালো মানের শেয়ার্ড হোস্টিং প্যাকেজ দিয়ে শুরু করতে পারেন। তারপর যদি দিন দিন ওয়েবসাইটে ট্রাফিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে যায় তাহলে অন্যান্য হোস্টিং সার্ভারে মাইগ্রেট করতে পারেন। তাছাড়া আগেই একটা নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য দামি সার্ভার কিনে ব্যবহার করা উচিত হবে না।

জনপ্রিয় হোস্টিং প্রোভাইডার

নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় ইন্টারনাশনাল ডোমেইন ও হোস্টিং প্রোভাইডারের নাম দেওয়া হলোঃ

  1. Bluehost
  2. HostGator
  3. Namecheap
  4. DreamHost
  5. Hostinger
  6. A2 Hosting
  7. SiteGround
  8. GoDaddy Hosting
  9. InMotion Hosting
  10. HostPapa
  11. WP Engine

উপরের ওয়েবসাইট গুলো ইন্টারনাশনাল ও ভালো মানের হোস্টিং প্রোভাইডার। এইগুলো ছাড়া বাংলাদেশী অনেক হোস্টিং প্রোভাইডার রয়েছে যারা ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে।

কিভাবে হোস্টিং কিনবেন?

হোস্টিং কেনার জন্য আগে আপনার কাছে একটি ইন্টারনাশনাল পেমেন্ট মেথোড থাকার প্রয়োজন যেমনঃ পেপাল, মাস্টার কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড ইত্যাদি। আর যদি আপনার কোন মেথোড না থেকে থাকে তাহলে যাদের এইসব আছে তাদের থেকে কিনে নিতে পারেন। অথবা বাংলাদেশী হোস্টিং প্রোভাইডার থেকে মোবাইল ব্যাংকিং যেমনঃ রকেট, বিকাশ, নগদ এই গুলো মাধ্যমেও হোস্টিং কিনতে পারেন।

যদি আপনার পেমেন্ট মেথোড ক্লিয়ার থেকে থাকে তারপর আপনি আপনার পছন্দের একটি হোস্টিং প্রোভাইডারের ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেখান থেকে আপনার উপযুক্ত প্যাকেজটি ক্রয় করে নিন। কিভাবে হোস্টিং কিনতে হয় এবং একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানাতে হয় সেই সম্পর্কে টিউটোরিয়াল আমার ব্লগে ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে। এর মধ্যে আপনি চাইলে নিজে শিখে নিতে পারেন।

হোস্টিং এর দাম কত?

হোস্টিং সার্ভারের উপর ভিত্তি করে প্যাকেজ বিভিন্ন দামের হয়ে থাকে। আপনি যদি ইন্টারনাশনাল কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে একটু খরচ বেশি হবে। আর যদি দেশী হোস্টিং প্রোভাইডার থেকে হোস্টিং কিনেন তাহলে ছোট প্যাকেজ আকারে কিনতে পারবেন। এখন সঠিক ঐ ভাবে দাম গুলো বলা সম্ভব না কারণ এক কোম্পানির একেক দাম। সাধারণত ১জিবির প্যাকেজে ১০০০- ৫০০০ টাকার প্যাকেজ বেশি দেখা যায়। আপনি প্রত্যেক ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির ওয়েবসাইট ভিজিট করলেই দাম গুলো দেখতে পারবেন।

উপসংহার

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে গেলে যে বেসিক দুটি জিনিসের জ্ঞান থাকা আবশ্যক একটি ডোমেইন কি? উপরটি হোস্টিং কি? তারপর একটা ওয়েবসাইট বানানোর কাজে হাত দিতে হয়। হোস্টিং কিনতে গেলে আবার বাজারে কয়েক ধরেন হোস্টিং দেখা যায় সেজন্য আমি আপনাদের কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি ওয়েব হোস্টিং কি? এবং হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি। আবার প্রত্যেক হোস্টিং গুলোর মধ্য পার্থক্যও কোন ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং ব্যবহার করবেন। আশা করি হোস্টিং কিনতে গেলে কিছু হলেই এই আর্টিকেলটি কাজে আসবে।

আরো পড়ুনঃ

ডোমেইন কি? ডোমেইন কত প্রকার ও কি কি?

ক্লাউডফ্লেয়ার কি? | কেন ব্যবহার করবেন? | সেটআপ পদ্ধতি।

.me ফ্রি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন স্টুডেন্টদের জন্য Github দিয়ে।

গিটহাব স্টুডেন্ট ডেভেলপার প্যাক কি? বিস্তারিত।

MD Biplop Hossain

আমি মোঃ বিপ্লব হোসেন। নিজেকে আমি একজন প্রযুক্তি প্রেমী মানুষ হিসাবে পরিচিত দিতে বেশি পছন্দ করি। আমি শিখতে ও শেখাতে পছন্দ করি তাই নিজের এই ছোট্ট ব্লগের মাধ্যমে ইন্টারনেটে বাংলায় প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছি। বর্তমানে আমি ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপার হিসাবে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!